আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক কাকে বলে, তাই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।
পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে
কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যত সংখ্যক টোটন থাকে সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক বলে।
এক কথায় বলা যায়, একটি মৌলের পরমাণুতে যত সংখ্যক প্রোটন থাকে, সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Atomic Number) বলে।
যেমন সোডিয়াম পরমাণু নিউক্লিয়াসে 11 টি প্রোটন আছে। তাই সোডিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা 11
বিভিন্ন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা
মৌলিক পদার্থ | পারমাণবিক সংখ্যা |
হাইড্রোজেন(H) | 1 |
হিলিয়াম(He) | 2 |
লিথিয়াম(Li) | 3 |
বেরিলিয়াম(Be) | 4 |
বোরন(Br) | 5 |
কার্বন(C) | 6 |
নাইট্রোজেন(N) | 7 |
অক্সিজেন(O) | 8 |
ফ্লুরিন(F) | 9 |
নিয়ন(Ne) | 10 |
পারমাণবিক সংখ্যা নির্ণয়
কোনো মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক
= পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা মোট প্রোটন সংখ্যা
= পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রনের সংখ্যা
নিউক্লিয়াসের আধানের সঙ্গে পারমাণবিক সংখ্যা সম্পর্ক
পরমাণু নিউক্লিয়াসে যত সংখ্যক ধনাত্মক আধান বিশিষ্ট প্রোটন সংখ্যা থাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা তার সমান হয়।
পারমাণবিক সংখ্যা ও ভরসংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক
কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা মোট প্রোটন সংখ্যা ও মোট নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টি কে ওই মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যা বলে।
তাহলে, ভরসংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউটন সংখ্যা ।
অর্থাৎ ভরসংখ্যা = পারমানবিক সংখ্যা + নিউটন সংখ্যা
অতএব পারমাণবিক সংখ্যা = ভরসংখ্যা – নিউট্রন সংখ্যা
এখন আমরা জানি যে পরমাণুর ভরসংখ্যা = পারমাণবিক সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা। যদি কোন মৌলের পরমাণু নিউক্লিয়াসে Z সংখ্যক প্রোটন থাকে এবং N সংখ্যক নিউট্রন থাকে, তাহলে মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যা A হয়।
সেক্ষেত্রে নির্ণেয় পারমানবিক সংখ্যা Z= A – N
পারমাণবিক সংখ্যাকে মৌলের স্বকীয় ধর্ম বলা হয় কেন?
পারমাণবিক সংখ্যাকে মৌলের স্বকীয় ধর্ম বলা হয় কারণ -
যে কোনো মৌলের রাসায়নিক ধর্ম নির্ভর করে, ওই মৌলের পারমাণবিক সংখ্যার ওপর।
যেকোনো মৌলের প্রকৃতি নির্ধারিত হয় ওই মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা প্রোটন সংখ্যা বা পারমাণবিক সংখ্যার ওপর।
যদি কোনো কারনে মৌলের পারমাণবিক সংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটে, তাহলে ওই মৌলের রাসায়নিক ধর্মেরও পরিবর্তন হয়। নতুন ধরনের মৌলের উদ্ভাবন ঘটে।
তাই একই পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট ভিন্ন ভিন্ন মৌল থাকতে পারে না। যে কারণে পারমাণবিক সংখ্যা দেখে মৌলকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়। এইজন্য পারমাণবিক সংখ্যাকে মৌলের স্বকীয় ধর্ম বলা হয়।
পরমাণুর মৌলিকত্ব কিসের উপর নির্ভর করে?
যে কোন মৌলের পরমাণুর মৌলিকত্ব নির্ভর করে ওই ওই মৌলের পরমাণুর কেন্দ্রকে ঢাকা মোট প্রোটন সংখ্যা বা পারমাণবিক সংখ্যার উপর।
পারমাণবিক সংখ্যার বৈশিষ্ট্য
- একই পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট অনেকগুলি মৌল থাকতে পারে না।
- রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় মৌলের পারমাণবিক সংখ্যার কোন পরিবর্তন ঘটে না।
- সাধারণ অবস্থায় যেকোনো মৌলের পরমাণুর পারমানবিক সংখ্যা ও ইলেকট্রন সংখ্যা সমান।
উপসংহার
আশা করি পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক কাকে বলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণরূপ বুঝতে পেরেছেন।